সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলজুড়ে বেড়েছে বৃষ্টিপাত। তারই প্রভাবে ভোলায় ও একটানা চার-পাঁচ দিন ধরে থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি। এতে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে বেড়েছে পানি। কোথাও কোথাও আবার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ।

তবে ১০ দিন আগেও ইলিশশূন্য ছিল জেলেদের জাল। নদীতে মাছ না পেয়ে রীতিমতো হতাশ ছিলেন জেলেরা। চড়া সুদে ঋণ ও ধারদেনায় হিমশিম খেতে হয়েছিল তাদের। এখন আগের তুলনায় ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করায় কিছুটা হাসি ফুটেছে মুখে। ইতোমধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে আড়তগুলো।

মৎস্য বিভাগ বলছে, আবহাওয়ার কারণে এতদিন জেলেরা ইলিশশূন্য থাকলেও আশা করি এখন থেকে জেলেদের জালে ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। গেল চার-পাঁচ দিন মেঘনা তেঁতুলিয়া ও বঙ্গোপসাগরে যেভাবে ইলিশ পাওয়া গেছে, এভাবে থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সাগর উপকূলের স্লুইস ঘাট, মাদ্রাজ ও সামরাজসহ বিভিন্ন ঘাট ঘুরে জানা যায়, গেল কয়েক দিন ধরে মাছ বিক্রি আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। কোথাও আবার কোটি কোটি টাকার মাছ বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। নদী ও সাগরে গেল চার-পাঁচ দিনের মতো ইলিশের এমন প্রাপ্যতা অব্যাহত থাকলে বিগত দিনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জেলেরা।

জেলেরা আরও জানান, সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলজুড়ে বেড়েছে বৃষ্টিপাত। এতেই জালে উঠছে ব্যাপক ইলিশ। এতে ঘাটে ঘাটে বেড়েছে ব্যস্ততা। সরগরম হয়ে উঠছে আড়তগুলো। বেড়েছে কেনাবেচাও।

মনির, ইলিয়াস, লোকমান ও সিরাজ মাঝিসহ কয়েকজন জেলে জানান, তিন দিন ধরে মেঘনা ও সাগর মোহনায় ইলিশ ধরা পড়ছে। এ অবস্থা থাকলে তাদের বিদ্যমান সংকট দূর হবে। অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। সেগুলো মিটিয়ে দিতে পারবেন।

গত কয়েক দিন জেলেদের জালে যেভাবে ধরা পড়ছে ইলিশ, এটা অব্যাহত থাকলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ।

তিনি বলেন, বৃষ্টি বাড়ায় সাগর থেকে নদীতে চলে আসছে ইলিশ। ফলে জেলেরা আগের তুলনায় মাছ পাচ্ছেন। কয়েক দিনের মধ্যে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে। এতে জেলেদের সব সংকট কেটে যাবে।

উৎপাদন ও সরবরাহ অব্যাহত থাকলে জেলেদের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বাজারে মাছের দামও কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।